Essay

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও তার প্রতিকার রচনা

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি তার প্রতিকার রচনা

[ঢা বো.-০২, ০৬, ১২, চ. বো-০৮, রা, বো,-০১, ০৭, য. বো. ০৬.১২. সি. বো-০৭, ব, বো-০৭]

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি তার প্রতিকার রচনা

ভূমিকা:

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও তার প্রতিকার –   আমাদের দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি আজ আর কোনো বিশেষ সংবাদ নয়, যেন স্বতঃসিদ্ধ একটি নিত্য সত্য । প্রতিবছর বা প্রতি মাসে তো বটেই, প্রতি ঘন্টায় এমনকি প্রতি মুহূর্তে জিনিসপত্রের দর বাড়ছে। এ যেন । প্রাণীর বয়সের মতো, শুধু বাড়ে, একবার বাড়ার সুযোগ পেলে আর নামেনা। অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসই । আজবহু মানুষের কাছে বিলাসদ্রব্য হিসেবে গণ্য। গাঁয়ে এমন লোক আছেন, দু’বেলা দু’মুঠো খাওয়া যাদের কাছে প্রাগৈতিহাসিক সত্য। যারা উপযুক্ত আচ্ছাদনের অভাবে লোকচক্ষুর অন্তরালে দীর্ঘকাল স্বেচ্ছা-নির্বাসিত। কেরাসিন ভর্তি প্রদীপের চেয়েও বিস্ময়ের বস্তু। গৃহনির্মাণের সামান্য উপকরণ তাজমহলের চেয়েও দুমূল্য। এছাড়া, ঔষধকে স্বর্গলোকের অমৃত, কয়লাকে হীরক, আর দই-দুধ ইত্যাদি খাদ্য দ্রব্যকে নিষিদ্ধ বস্তু হিসেবে গণ্য করতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ আজ যেন অভ্যস্ত।

উন্নত দেশের সাথে বাংলাদেশের দ্রব্যমূল্যের তুলনা:

হয়তো প্রশ্ন উঠতে পারে, পণ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি জনজীবনের বিপর্যয়কে এত বেশি প্রকট করবে কেন? পৃথিবীর বহু উন্নত দেশও তো এই মূল্যবৃদ্ধির প্রকোপ থেকে মুক্ত নয়। এর উত্তরে বলা যায়, পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে জিনিসপত্রের দর যেমন বাড়ছে, জনসাধারণের আয়ও তেমন বাড়ছে। আর বাংলার বেলায় এর উল্টো। আয় যদি বাড়ে এক পয়সা তো দাম বাড়ে তিনগুণ। ফলে বহু লোক অতি প্রয়োজনীয় বহু জিনিস কিনতেই পারে না। ক্রমাগত। মূল্য বৃদ্ধির ফলে বাঁধাধরা আয়ের লোকেরা অনেক সময় আবার প্রয়োজনের তুলনায় অল্প জিনিস কেনে। ফলে দেখা যায় মূল্যবৃদ্ধির কারণে কেউ কেউ পণ্যদ্রব্য আদৌ কিনতে পারলোনা, আবার কেউ কেউ ছিটেফোটা দিয়ে কাজ চালালো। এভাবে দেখা যায় দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি বাংলাদেশের জনগণকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।

জনজীবনে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া:

ক্রমাগত পণ্যমূল্য বৃদ্ধি জনজীবনে অসন্তোষ, ক্রোধ ও বিদ্বেষ পুঞ্জীভূত করে। প্রতিনিয়ত বিধ্বংসী অভাব ও শোচনীয় দারিদ্র্যের কষাঘাতে মানুষ হয়ে ওঠে মরীয়া। সমাজজীবনে বিক্ষোভ ও উচ্ছঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির সাথে শ্রমিক চাকরির বেতন বাড়ানো হয় না। ফলে দিন মঞ্জুর ও স্বল্প বেতনের চাকরি জীবীদের জীবন হয়ে পড়ে দুর্বিষহ। তাই বাধ্য হয়ে ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া বন্ধ করে। অবৈধ পথ অবলম্বন করে বাঁচার চেষ্টা করে। এভাবে সমাজজীবনে নানা অবক্ষয়ের সৃষ্টি হয়, নেমে আসে জীবন যাত্রার মান, বিঘ্নিত হয় শিক্ষা সংস্কৃতি।

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ:

একটি দেশের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। বাংলাদেশের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পেছনে যেসব কারণ রয়েছে সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলো:

০১. চাহিদা ও যোগান:পণ্যমূল্য বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় কারণ হলো চাহিদা ও যোগানের ভারসাম্যহীনতা। চাহিদা তীব্র ও যোগান সীমাবদ্ধ হলে পাণ্যের জন্যে ক্রেতার ভীড় বেড়ে যায়। পণ্য সংগ্রহের জন্যে শুরু হয় প্রতিযোগিতা। ফলে অনিবার্যভাবে মূল্যবৃদ্ধি ঘটে।

0২. জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও উৎপাদন ঘাটতি: আমাদের দেশে যে হারে জনসংখ্যা বাড়ছে সে হারে উৎপাদন বাড়ছেনা। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে চাহিদা ও উৎপাদনের এ অসঙ্গতি নষ্ট করছে চাহিদা ও যোগানের ভারসাম্য। ফলে দাম বেড়েই চলছে ক্রমাগত ।

 ০৩. কৃত্রিম অভাব: আমাদের দেশের বহু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম অভাব সৃষ্টিতে তৎপর। তারা অনেক সময় টাকার জোরে বিপুল পরিমাণ পণ্যসামগ্রী গুদামজাত করে রাখে এবং দেশে পণ্যের অভাব দেখা দিলে বাড়তি দামে মজুদ করা পণ্য বাজারে ছাড়ে। এভাবে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি ঘটে।

০৪, কৃষি উৎপাদন হ্রাস: আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে মানুষ শুধু উর্ধ্বের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে। চালাচ্ছে অভিযান। কিন্তু আমাদের কৃষকদের সেই মান্ধাতার আমালের চাষাবাদ পদ্ধতি ও উপকরণ দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। ফলে উৎপাদন জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে না বেড়ে বরং হ্রাস পাচ্ছে। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণেও আমাদের দেশের কৃষি ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

০৫. চোরাচালান: চোরাকারবারিরা অতিরিক্ত মুনাফার আশায় অনেক সময় দেশের পণ্য বিদেশে পাচার করে দেয়। ফলে বাজারে পণ্যের সরবরাহ কমে যায় ও পণ্যমূল্য বাড়ে।

০৬. বৈদেশিক রপ্তানি: অনেক সময় বিদেশে পণ্য রপ্তানি লাভজনক হলে রপ্তানিকারকেরা সেগুলো বিদেশে রপ্তানি করে। এর ফলে দেশেও রপ্তানিযোগ্য পণ্যের মূল্যবাড়ে।

০৭. কর বৃদ্ধি: অনেক সময় সরকার প্রশাসন চালাতে গিয়ে দ্রব্যের উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর ধার্য করে, যা দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধিতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে।

০৮. মুদ্রাস্ফীতি ও ঘাটতি অর্থব্যবস্থা: মুদ্রাস্ফীতির ফলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ে। আমাদের দেশের ঘাটতি অর্থব্যবস্থার ব্যয় সংকুলানের জন্যে সরকার অনেক সময় অতিরিক্ত নোট বাজারে ছাড়েন। ফলে সম্পদের তুলনায় টাকার পরিমাণ বাড়ে যা দ্রব্যমূল্যের বুদ্ধিতে ব্যাপকভাবে ।

০৯. কালোটাকার দৌরাত্মঃ নানা অবৈধ পন্থায় সমাজে এক শ্রেণির লোক বিস্তর কাল্যাটাকার মালিক হয়েছে। অবৈধ পথে কালো টাকা তাদের সহায়তা করে থাকে। হাতে আসায় তাদের ক্রয় ক্ষমতা অধিক হওয়ায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।

১০. বন্টন ব্যবস্থার ত্রুটি: বন্টন ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে অনেক সময় বহু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ে। সঠিক জায়গায় সঠিক পণ্য যথাসময়ে পৌঁছে দেয়া হলো সুষ্ঠু বন্টন ব্যবস্থার মূল কথা। দুঃখের বিষয় বন্টন ব্যবস্থার এ মূলনীতির দিকে লক্ষ রেখে আমাদের দেশে প্রায়ই কাজ হয় না।

১১. পরিবহন ও যোগাযোগ: যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ত্রুটি সমস্যাকে অনেক সময় জটিল করে তোলে। উপযুক্ত পথঘাট ও পরিবহনের অভাবে ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় ঠিক জিনিসটি পৌঁছে দেয়া হয় না। ফলে যোগান ও যথারীতি হয় না এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়।

১২. বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি: পণ্যমূল্য বৃদ্ধি কেবল বাংলাদেশে একক সমস্যা নয়। বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশ ও এখন এ সমস্যার মোকাবেলা করছে। ফলে বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্য বেড়ে গেলে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি ঘটে থাকে।

১৩. রাজনৈতিক অস্থিরতা: বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অস্থিরতার কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিকার:

আমাদের দেশের দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে হলে জনগণ ও সরকারকে সমিলিত প্রচেষ্টা নিতে হবে। তবে দলের স্থিতিশীল রাখার জন্যে নিচের ব্যবস্থা গুলো গ্রহণ করা যেতে পারে।

০১. চাহিদা ও যোগানের সঙ্গতিঃ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধ করতে হলে মন্যের চাহিদা ও যোগানের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। যখন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হবে তখন বাজারে সেই মধ্য বেশি করে সরবরাহ করতে হবে।

০২. জনসংখ্যা রোধ ও উৎপাদনের সমতাঃ দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে হলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে এবং দেশের জনসংখ্যার হারে উৎপাদনের পরিমাণ বাড়াতে হবে।

০৩. অসাধু ব্যবসায়ীদের বয়কটের ব্যবস্থাঃ  অসাধু ব্যবসায়ী যারা বাজারে সব ধন্য জয় করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে তাদের বয়কট করতে হবে। দ্রব্যমূল্য মনিটরিং সেল গঠন করে প্রতিদিনের বাজার দর সরকারকে জানাতে হবে । তাহলে মধ্যমূল্য বৃদ্ধি রোধ হবে।

০৪. কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষি ভর্তুকি বাড়ানোঃ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ করতে কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিতে চাষাবাদের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ হবে।

 ০৫. চোরাচালান রোধ: অতিরিক্ত মুনাফার লাভে যে সব চোরাকারবারিরা দেশের পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে এদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে চোরাচালান রোধ করতে হবে।

 ০৬. বৈদেশিক রপ্তানির সমতা: অনেক সময় বিদেশে রপ্তানি লাভজনক হলে রপ্তানিকারকেরা অতিরিক্ত পরিমাণে পণ্যদ্রব্য বিদেশে রপ্তানি করে। এই অতিরিক্ত রপ্তানি বন্ধ করে রপ্তানির সমতা রক্ষা করতে হবে।

০৭. কর ব্যবস্থা সহজীকরণ:  অনেক সময় দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসন চালাতে গিয়ে সরকার অনেক সময় জনগণের উপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপিয়ে দেয়। সুতরাং, এই দুর্নীতি রোধ করে কর ব্যবস্থা সহজীকরণ করতে হবে।

০৮. মুদ্রাস্ফীতি রোধ ও কালো টাকা নিয়ন্ত্রণ: নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দরবৃদ্ধি রোধ করতে হলে মুদ্রাস্ফীতি যেমন- নিয়ন্ত্রণ আবশ্যক তেমনি আবশ্যক কালো টাকার অত্যাচার বন্ধ করা।

০৯. সুষ্ঠু বণ্টন ব্যবস্থা: সঠিক জায়গায় সঠিক সময়ে সঠিক পণ্য সরবরাহের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এতে তা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধ হবে ।

১০. যোগাযোগ ব্যবস্থা: সঠিক জায়গায় সঠিক পণ্য যথাসময়ে পৌঁছে দেবার জন্যে যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। ফলে যোগান ও সরবরাহের রাস্তাঘাট ভালো থাকলে দ্রব্যমূল্য বাড়বেনা।

 ১১. স্থিতিশীল রাজনীতি: দেশের রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে। দেশকে হরতাল বন্ধ করতে পারলে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধ।

১২. দুর্যোগ মোকাবেলায় পদক্ষেপ: প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন- বন্যা, খরা, সাইক্লোন, ঘূর্ণিঝড় দেখা দিলে পূর্বেই আমদানি করে নিত্য প্রয়োজনীয় যেতে পারে। করা দ্রব্যের সরবরাহ বাড়াতে হবে। সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ- পণ্যমূল্য নির্ধারণ,

১৩.আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ: দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে। সরকারের নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। পণ্যমূল্য নির্ধারণে আইন প্রণয়ন ও তা প্রয়োগের ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয় অথবা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এ পদক্ষেপ নিতে পারে। ক্লিক করুন

দ্রব্যমূল্যের প্রভাব:

ক্রমাগত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি জনজীবনে অসন্তোষ, ক্রোধ ও বিদ্বেষ পুঞ্জীভূত করা। এর প্রভাবে সমাজ জীবনের নানা ক্ষেত্রে নেমে আসে বিপর্যয়। মানুষের আয় বাড়াতে না পারলে দ্রব্যমূল্য নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।

ক.শিক্ষা ক্ষেত্রে: দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ফলে শিক্ষা উপকরণও হয় পড়ে শিক্ষার্থীদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।

খ.চিকিৎসা ক্ষেত্রে: ঔষধ, পথ্য, চিকিৎসা খরচ বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যয় বেড়েছে।

গ. শিল্প ক্ষেত্রে: শিল্পের কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে শিল্প উন্নয়নের ক্ষেত্রে দ্রব্যমূল্য ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।

ঘ. কৃষি ক্ষেত্রে: কৃষি উপকরণের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কৃষি ক্ষেত্রে কৃষি উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে ব্যাপক হারে।

আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে: পণ্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে সমাজ জীবনে নেমে এসেছে হতাশা, ব্যর্থতা এবং গ্লানি। ফলে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অচল হয়ে পড়েছে।

চ. জীবন যাত্রার ক্ষেত্রে: পণ্যমূল্য বৃদ্ধি জীবনযাত্রার মানকে করেছে নিম্নমুখী। ফলে মানুষের জীবন হয়ে পড়েছে দুর্বিষহ।

ছ. মুদ্রার মানের ক্ষেত্রে: দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে বিশ্ববাজারের মুদ্রা মানের কাছে আমাদের দেশের মুদ্রার সূচক বা মান নিম্নমুখী হয়ে পড়েছে। যে কোন দেশের মুদ্রার মান দ্রব্যমূল্যই নিয়ন্ত্রণ করে ।

জ. সাহিত্য-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে: পণ্যমূল্য বৃদ্ধি সাহিত্য ও সংস্কৃতির চর্চার ক্ষেত্রেও ব্যাপক প্রভাব ফেলে । ঝ. মূল্যবোধের ক্ষেত্রে: সমাজে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে নানা প্রকার সমস্যার সৃষ্টি হয় যা মূল্যবোধের অবক্ষয় ডেকে আনে।

ঞ. স্থিতিশীলতা রক্ষায়: সামাজিক, পারিবারিক, অর্থনৈতিক এবং রাষ্ট্রনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকা বাঞ্ছনীয়। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দাঃ ক্রমাগত পণ্যদ্রব্য বেড়ে যাওয়ার ফলে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা পরিলক্ষিত হচ্ছে যা বিশ্বব্যাপী আতঙ্কের সৃষ্টি করছে।

উপসংহার:

বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কারণে যেভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে, তার সঠিক প্রতিরোধ আজ আর বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব নয়। তার পরেও  যেটূকু নিয়ন্ত্রণে আনা যায় তা যে কোন মূল্যেই রোধ করা হবে। তার জন্য প্রয়োজন উৎপাদন শিল্পের প্রসার ও অকৃত্রিম দেশপ্রেম।

  • দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি তার প্রতিকার রচনা

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button