মানপ্ত্র

শ্রদ্ধেয় শিক্ষক এর অবসর গ্রহণে একটি মানপত্র

 তোমার বিদ্যালয়ের একজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক এর অবসর গ্রহণে একটি মানপত্র রচনা কর।

 

জ্যোতিষ চন্দ্ৰ বিশ্বাস এর অবসর গ্রহণে-

শ্রদ্ধাঞ্জলি

 

হে আলোর পথের দিশারি

নবীন বসন্তের প্রাণবস্তু বর্ণিল শোভায় সজ্জিত মধ্যাহ্নে আজ ব্যথাতুর কোমল হৃদয়ের শ্রদ্ধা ও অশ্রুসজল প্রীতি গ্রহণ করুন। সুদীর্ঘকাল অব ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠে পাঠদান ও সগৌরবে দায়িত্ব পালন শেষে আজ বিউগলের করুণ রাগিণীতে বেজে উঠেছে আপনার বিদায়ের ব্যথিত তান। তাইতো বিমল প্রকৃতির শ্যামল শোভায় মন যেন বলে উঠে-

“যতবার পরাজয়

ততবার কহে, ‘আমি ভালবাসি যারে

সে কি কভু আমা হতে দূরে যেতে পারে।”

 

হে জ্ঞান তাপস পরম সুহৃৎ

আপনার অন্তঃকরণ ছিল পবিত্র ও মহান। আপনার মধুর ব্যবহার, আচার-আচরণ ও চারিত্রিক মাধুর্যে আমাদের মাঝে গড়ে উঠেছিল অমরাবতীর অনাবিল আবেশ। তাই এই শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণে হৃদয়ে ধ্বনিত হয়-

“দেবতারে যাহা দিতে পারি, দিই তাই

প্রিয়জনে-প্রিয়জনে যাহা দিতে পাই

তাই দিই দেবতারে, আর পাব কোথা।

দেবতারে প্রিয় করি, প্রিয়েরে দেবতা।”

 

হে প্রান, মহান কর্মবীর

আমাদের গরম সৌভাগ্য যে, আমরা আপনার মতো একজন কর্মঠ, উদারচিত্ত, সুদক্ষ ও প্রজ্ঞাবান শিক্ষকেরা পদপ্রান্তে বসে শিক্ষা লাভের সুযোগ পেয়েছি। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি আপনার দেয়া আলো জ্বেলে আমরা আলো ছড়াবো দিক-দিগন্তে। তাইতো তব বিদায় ক্ষণে হৃদয়ে সানাইয়ের তানে বেজে উঠেছে- ক্লিক করুন  মানপত্র

“এত আশা, ভালবাসা,

এতই নিরাশা, এত দুঃখ কেন?”

 

 হে জ্ঞান তাপস শিক্ষাব্রতী

আপনি নিরলস পরিশ্রমে আমাদের জীবনকে কানায় কানায় ভরে দিয়েছেন ফুলে ফসলে শস্য সম্পদে। তাইতো আমাদের কণ্ঠে আজ অবলীলায় উচ্চারিত হচ্ছে-

“কত রাজ্য, কত রাজা গড়িছ নীরবে

হে পূজ্য, হে প্রিয়।

একত্বে বরেণ্য তুমি, স্মরণ্যে এককে।”

 

হে আদর্শ সাধক শিক্ষাগুরু

নীতি ও আদর্শের অবিচল নিষ্ঠায় আপনি ছিলেন অনড়। শত প্রলোভনও আপনাকে একচুল নীতিভ্রষ্ট করতে পারে নি জীবনাদর্শ থেকে। তাইতো শত পারিবারিক প্রতিকূলতার মাঝে আপনি বলতে চেয়েছেন-

“আমি সেই হতভাগা বাতিওয়ালা

যার নিজের জীবন অন্ধকারমালা

অথচ অন্যের জীবনে বাতি জ্বালাই।”

 

হে বিদায়ী বীর

আজ এই বিদায় লগ্নে বিশেষ দায় থেকে অনেক স্মৃতিই উথলে উঠছে সবার মনে। আপনি আমাদের হৃদয় নিংড়ানো সম্রদ্ধ প্রণতি গ্রহণ করুন বয়সের দোষে কখনও কোন ভুল করে থাকলে ক্ষমিও অপরাধ মম। আর এই পরম সত্য প্রকাশে রবীন্দ্রনাথের অমোঘ সত্যের বাণী উচ্চারণ করছি-

“কী গভীর দুঃখে মগ্ন সমস্ত আকাশ,

সমস্ত পৃথিবী । চলিতেছি যতদূর,

শুনিতেছি একমাত্র মর্মান্তিক সুর

“যেতে আমি দিবনা তোমায়।

সবে কহে, যেতে নাহি দিব। যেতে নাহি দিব।”

 

আজ বিদায়ের লগ্নে আপনার কাছে আমাদের প্রার্থনা-স্বীয় বদান্যতা ও উদার্যগুণে আপনি যেন আমাদের শত দোষের ত্রুটি মার্জনা করে বিদায়ী আশীর্বাদে আমাদের ভবিষ্যৎ জীবনকে সুখী ও সমৃদ্ধ করে তুলেন। আপনার পারিবারিক ও ব্যক্তিগত জীবন হয়ে উঠুক সুখী, সমৃদ্ধ, শান্তির কোমল স্পর্শময় ও দীর্ঘজীবী। স্রষ্টার দরবারে এ আমাদের ঐকান্তিক প্রার্থনা। তাই কাব্যিক ব্যঞ্জনায় বলতে চাই- ( মানপত্র )

“মোর নাম এই বলেই খ্যাত হোক

আমি তোমাদেরই লোক।”

তারিখ: ২৭ মার্চ, ২০২৩ খ্রি.                                                                                                              বিনয়াবনত-

অশ্রুসিক্ত আপনার প্রাণের স

শিক্ষার্থীবৃন্দ।

                        চলবল উচ্চ বিদ্যালয় কালকিনি, মাদারীপুর ।

 

  • শ্রদ্ধেয় শিক্ষক এর অবসর গ্রহণে একটি মানপত্র

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button